শিশুর খাদ্য
মায়ের দুধ শিশুর শ্রেষ্ঠ খাবার
• শিশুর জন্মের সাথে সাথে আধ ঘন্টার মধ্যে তাকে মায়ের স্তন চুষতে দিতে হবে। এতে করে শিশুর শাল দুধ পাওয়া নিশ্চিত করা সম্ভব হবে
• শিশুর পূর্ণ ৬ মাস (১৮০ দিন) বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধই যথেষ্ট, এমন কি এক ফোটা পানিরও প্রয়োজন নেই
মায়ের দুধ ছাড়া শিশুকে মধু, চিনির পানি, পানি, তেল বা অন্য কিছুই দেয়া যাবে না
• শাল দুধ শিশুর প্রথম টিকা হিসেবে কাজ করে।এতে রোগ প্রতিরোধক উপাদান আছে, যা শিশুর মারাত্নক সংক্রামক রোগ ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমায়
• জন্মের প্রথম ৬ মাস (১৮০ দিন) পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধই যথেষ্ট। এই সময়ে শিশুর সঠিক শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি উপাদানই মায়ের দুধে আছে
মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় অবস্থান ও এটাচমেন্ট
মা ও শিশুর অবস্থান লক্ষ করুন :
• মা পিঠ হেলান দিয়ে বসেছে
• শিশুর পিঠ ও পাছা ভালো ভাবে ধরতে হবে
• শিশুর শরীর মায়ের দিকে ফেরানো আছে
মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় এটাচমেন্ট লক্ষ করুনঃ
শিশু মায়ের বুকে ভালো ভাবে লেগে আছে
শিশুর নীচের ঠোঁট উল্টানো এবং সে বড় করে হা করছে
স্তনের কালো অংশের বেশির ভাগ শিশুর মুখের ভেতরে আছে এবং দুধ গেলার শব্দ পাওয়া যাচ্ছে
এ সময়ে মা তার সকল স্বাভাবিক খাবার বেশি পরিমানে খাবে। কালিজিরা, লাউ, দুধ সাগু বেশি করে খাবে যাতে করে মায়ের দুধের পরিমান বাড়ে
শিশুর ০-৬ মাস বয়স পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধই যথেষ্ট
শিশুর পূর্ণ ৬ মাস (১৮০ দিন) বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধই যথেষ্ট, এমন কি এই সময় এক ফোটা পানিরও প্রয়োজন নেই
* শিশুকে যত বেশি বার মায়ের বুকের দুধ খাওয়াবেন, তত বেশি আপনার বুকে দুধ তৈরী হবে। এর ফলে শিশুর জন্য পর্যাপ্ত মায়ের দুধ নিশ্চিত হবে
• সারাদিনে অন্ততপক্ষে ৮-১০ বার মায়ের দুধ খেতে দিতে হবে। যখন আপনার শিশু মুখ নাড়াবে বা হাত মুখে দিয়ে চুষবে তখন বুঝতে হবে তার ক্ষুধা পেয়েছে, এই সময় তাকে বুকের দুধ খেতে দিন
• প্রত্যেকবার বেশি সময় নিয়ে মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে
প্রত্যেকবার মায়ের দুধ খাওয়ানোর সময় এক স্তন থেকে খাওয়া শেষ করে আরেক স্তনের দুধ খেতে দিতে হবে। এতে শিশু প্রথম দিকের দুধ ও শেষের দিকের দুধ দুই খেতে পারবে]
৬ মাস পূর্ণ হলে শিশুর জন্য বাড়তি খাবার
• শিশুর ৬ মাস বয়স পূর্ণ হলে শুধুমাত্র মায়ের দুধই শিশুর পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য যথেষ্ট নয়। কাজেই তখন মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দেয়া প্রয়োজন
• তাই শিশুর পূর্ণ ৬ মাস (১৮০ দিন) বয়সের পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি ঘরে তৈরী উপযুক্ত বাড়তি খাবার খাওয়ান এবং ২৪ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে
বাড়তি খাবার কি?
• ৬ মাসের বেশি বয়সী শিশুদের মায়ের দুধের পাশাপাশি যে পারিবারিক খাবার খাওয়ানো হয় সেটিই শিশুর জন্য বাড়তি খাবার। যেমন: ভাত, মাছ, ডিম, রঙিন শাকসবজি এবং ফল-মূল
বাড়তি খাবারের প্রয়োজনীয়তা
• মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দেয়া শুরু করলে শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত হয় • এতে শিশুর শারিরীক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ দ্রুত হয়
• পুষ্টিকর বাড়তি খাবার খেলে শিশুর অসুখ বিসুখ কম হয়
• ঠিকভাবে বাড়তি খাবার খাওয়ালে সাধারন অসুখ বিসুখ থেকে শিশু তাড়াতাড়ি সেরে ওঠে
বাড়তি খাবারের ধরন
বিভিন্ন ধরনের পারিবারিক খাবার থেকে শিশুর জন্য বাড়তি খাবার তৈরী করতে হবে। নিচে দেয়া তিন ধরনের খাবারের তালিকা থেকে ১টি অথবা ২টি করে খাবার নিয়ে শিশুর জন্য খাবার তৈরী করতে হবে এবং এর মধ্যে অন্ততপক্ষে: ১টি প্রাণিজ খাবার থাকতে হবে-
• শক্তিদায়ক খাবার (শর্করা ও চর্বি)
-ভাত বা রুটি বা আলু এবং তেল/ ঘি/ মাখন
শরীর বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরক খাবার (আমিষ) :
—মাছ বা ডিম বা মুরগীর মাংস বা মুরগীর কলিজা বা ছোট মাছ বা বিভিন্ন ধরনের ঘন ডাল এবং —দুধ দিয়ে তৈরী খাবার।
• রোগ প্রতিরোধক খাবার (ভিটামিন ও খনিজ লবন) :
-সব ধরনের শাক-সবজি এবং বিভিন্ন ধরনের রঙিন ফল
এবং শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমানে বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে